খুব বেশি আজ মনে পড়ে মোর
আমার গাঁয়ের ছায়া,
কত সুন্দর তরু ছায়া ঘেরা
ভরিয়া রয়েছে মায়া।
সকাল বেলাতে ঘরের পিছনে
ডাকিয়া উঠিত পাখি,
শুনি নাতো আর শহরে এসব
সকালে মেলিয়া আখি।
পিউ পিউ ডাকে ডাকিত পাপিয়া
কোকিল ডাকিত আরো,
হরেক রকমে ডাকিত পাখিরা
নাম জানিনাতো কারো।
সকালে উঠিয়া গাঁয়ের কিষান
লাঙল কাঁধেতে ক্ষ্যাতে,
সৃষ্টির সুখে সারা দিন মান
উঠে আনন্দে মেতে।
ঘুম থেকে উঠে গাঁয়ের বঁধুরা
কলসি কাঁখেতে নিয়া,
এ সখী ও সখী গল্পে মাতিয়া
উঠে যে পুকুরে গিয়া।
গায়ের শিশুরা সকাল বেলাতে
ছুটে মক্তবে সবে,
মক্তবে গিয়া শুধুই কি পড়া!
কত কিছু করা হবে।
মক্তব থেকে ফিরিয়া সবাই
ছুটিতাম স্কুল পানে,
স্যারদের পড়া কত খেলাধুলা
আজো যে আমায় টানে!
বিকাল বেলায় ফিরিয়া বাড়িতে
থাকিতাম নাতো কেউ,
দলবেঁধে সবে খেলার মাঠেতে
উঠিতো খেলার ঢেউ।
সন্ধ্যায় যবে ফিরিতাম বাড়ি
মায়ের বেতের ভয়ে,
দাদুর কাছেতে আশ্রয় নিয়া
থাকিতাম ভালো হয়ে।
নূরানি কায়দা আমপারা নিয়া
বসিয়া সন্ধ্যা বেলা,
সুরা কিরাতের পড়ায় আমরা
করিতাম নাতো হেলা।
কোনমতে যদি হইতো আযান
দাদুর কোলেতে ঢলে,
দেশ বিদেশে ঘুরিয়া আসিতাম
আমরা ঘুমের ছলে।
আমার গাঁয়ের মায়াভরা সেই
পরিবেশটাকে ছাড়ি,
ইট পাথরের শহরের মাঝে
জমিয়েছি আমি পাড়ি।
গাড়ীর ডাকেতে ঘুমাইতে যাই
উঠিয়া গাড়ীর ডাক,
সাত সকালেও পাই নাতো আর
উঠিয়া পাখির হাঁক।
নাই সেথা ক্ষ্যাত খেলিবার মাঠ
কিংবা পুকুর ঘাট,
চারিদিকে শুধু আছে যে হেথায়
দালান কোঠার হাট।
ইট পাথরের শহরের মাঝে
লাগে নাতো আর ভালো,
কত ঝঞ্ঝাট বায়ুর দূষণ
শরীর হইছে কালো।
নির্মল আলো বাতাসের খুঁজে
ফিরিয়া যাইবো গাঁয়,
যেথায় আমার প্রান প্রিয় বাবা
ঘুমাইছে নিরালায়।
বিজয় একাত্তর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
২৭শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ঈসায়ী।
Post a Comment